দেবর-ভাবির দ্বন্দ্বে জাপায় ‘হ-য-ব-র-ল’

দেবর-ভাবির দ্বন্দ্বে ভোটের আগেও জাপায় ‘হ-য-ব-র-ল’

জাতীয় নির্বাচনের পূর্বমুহূর্তেও সংসদের প্রধান বিরোধী দল জাতীয় পার্টিতে বিশৃঙ্খলা চলছেই। দলটির চেয়ার‌ম্যান জিএম কাদের ও পৃষ্ঠপোষক রওশন এরশাদের দ্বন্দ্বের জেরেই লেগে আছে এই বিশৃঙ্খলা। এবার দ্বন্দ্ব আসন ভাগাভাগি নিয়ে। তাদের এই সম্পর্কের টানাপড়েনের মধ্যেই জাতীয় নির্বাচনের প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করেছে জাতীয় পার্টি। রওশন এরশাদ ও তার ছেলে শাদ এরশাদ, বিরোধী দলীয় চিফ হুইপ মসিউর রহমান রাঙ্গাসহ তার অনুসারীদের বাদ রেখেই ২৮৭টি আসনে প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেছে দলটি।

গেল সোমবার সন্ধ্যায় দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য দলীয় প্রার্থী ঘোষণা করে জাতীয় পার্টি। বনানীতে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করেন দলটির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু। এ সময় ৩০০ আসনের মধ্যে ২৮৭টির প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেন তিনি। বাকি ১৩টি আসনে প্রার্থীর নাম পরে ঘোষণা করা হবে বলে জানানো হয়। ঘোষিত তালিকায় দেখা যায়, রংপুর-৩ ও ঢাকা-১৭ আসন থেকে মনোনয়ন পেয়েছেন দলটির চেয়ারম্যান জিএম কাদের। বর্তমানে জাপার সংসদ সদস্যদের প্রায় সবাই আবার দলের মনোনয়ন পেয়েছেন। বাদ পড়েছেন শুধু পিরোজপুর-৩ আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য রুস্তম আলী ফরাজী। তার বাদ পড়ার বিষয়ে দলের মহাসচিব মুজিবুল হক বলেন, রুস্তম আলী কয়েক বছর ধরে দলের কার্যক্রমে সক্রিয় নন। সংসদেও দলের পক্ষে খুব বেশি কথা বলেননি। দলের প্রতি আনুগত্য নিয়ে সন্দেহ থাকায় এবার ওনাকে মনোনয়ন দেওয়া হয়নি। এছাড়া মসিউর রহমান রাঙ্গা বহিষ্কৃত হওয়ায় এবং সাদ এরশাদ মনোনয়ন না চাওয়ায় দেওয়া হয়নি।

এদিকে রওশন এরশাদ পন্থীরা বলছেন, প্রার্থীদের চূড়ান্ত তালিকা ঘোষণা করা হয়েছে। এখন রওশন এরশাদ ও জিএম কাদেরের মধ্যে সমঝোতার সুযোগ দেখা যাচ্ছে না। রওশন নির্বাচন না করলে তার অনুসারীরাও বিরত থাকবেন। দুই দিন আগে জাপার শীর্ষ দুই নেতার বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এছাড়াও প্রার্থী তালিকা থেকে বাদ পড়া রওশন অনুসারী নেতা মসিউর রহমান রাঙ্গা জানান, স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবেই নির্বাচন করবেন তিনি।

অপরদিকে জাতীয় পার্টির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু বুধবার সাংবাদিকদের বলেন, রওশন এরশাদ ও তার পছন্দের প্রার্থীদের জন্য তিনটি আসন এখনো খালি রাখা আছে। তারা মনোনয়ন ফরম নেবেন বলেও আশা প্রকাশ করেন চুন্নু। তবে, এই তিনটি আসনও তাদের চাহিদা অনুযায়ী পাবেন না বলে জানান তিনি। দলের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তাদেরকে মনোনয়নপত্র নিতে হবে।

দলের মধ্যে কোনো ভাঙন নেই বলে আবারও দাবি করে চুন্নু বলেন, বিএনপি যদি নির্বাচনে আসে তবে তাদের স্বাগত জানানো হবে। বিএনপি নির্বাচনে এলে কমিশন যদি নির্বাচন পেছায় তাতে জাতীয় পার্টির আপত্তি নেই।