বাংলাদেশের নিরাপত্তা বাহিনী মানবাধিকার লঙ্ঘন করেছে: যুক্তরাষ্ট্র

ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশের বিভিন্ন নিরাপত্তা বাহিনী মানবাধিকার লঙ্ঘন করেছে বলে জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের ওয়েবসাইটে শুক্রবার (১ ডিসেম্বর) ভোরে প্রকাশিত ২০২২ সালের সন্ত্রাসবিরোধী বৈশ্বিক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিচারবহির্ভূত হত্যাসহ অন্যান্য মানবাধিকার লঙ্ঘন বিষয়ক অপরাধের সঙ্গে বাংলাদেশের নিরাপত্তা বাহিনী জড়িত।

ওই প্রতিবেদনে বাংলাদেশ নিয়ে বলা হয়েছে, ‘ সন্ত্রাসবাদ বিরোধী যুদ্ধের অংশ হিসাবে বাংলাদেশের নিরাপত্তা বাহিনী বিশেষ করে পুলিশের ইউনিটগুলো সন্দেহভাজন সন্ত্রাসীকে গ্রেপ্তার করেছে। তবে নিরাপত্তা বাহিনীর বিভিন্ন ইউনিট বিচারবহির্ভূত হত্যাসহ মানবাধিকার লঙ্ঘনের সঙ্গে জড়িত।’

এতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের নিরাপত্তা বাহিনীগুলোকে যুক্তরাষ্ট্র সহযোগীতা করছে। প্রশিক্ষণ দিয়েছে। তবে র‌্যাব ও কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের (সিটিটিসিইউ) স্পেশাল ওয়েপন্স অ্যান্ড ট্যাকটিকস (সোয়াট) ডিভিশন লেহি আইন সম্পর্কিত নিষেধাজ্ঞার কারণে যুক্তরাষ্ট্রের সহযোগিতা পাবে না বলেও প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।

২০২২ সালেও বাংলাদেশে সন্ত্রাসীরা সক্রিয় ছিল এবং সহিংসতার কিছু ঘটনা ঘটেছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশের সরকার কঠোরভাবে সন্ত্রাসীদের , বিশেষ করে আল-কায়েদা অনুগত গোষ্ঠী জামা’আতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশ (জেএমবি) এবং আইএস অনুগত জেএমবির শাখা নব্য জেএমবিকে অনুসরণ করে চলেছে।

প্রতিবেদনটিতে বাংলাদেশে জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বিয়ার বিরুদ্ধে র‌্যাবের অভিযান ও কয়েকজন সদস্য গ্রেপ্তার হওয়ার তথ্যও তুলে ধরা হয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০০৯ সালের সন্ত্রাসবিরোধী আইন সন্দেহভাজন সন্ত্রাসীদের আটক ও গ্রেপ্তারের ভিত্তি আছে। ২০১৮ সালের ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন অনলাইনে উগ্রবাদী প্রচারণা, অর্থায়ন, সদস্য সংগ্রহের জন্য গ্রেপ্তারের সুযোগ থাকার বিষয়টি আছে মার্কিন প্রতিবেদনে। তবে এই আইন প্রয়োগ করে সরকারের সমালোচকদের আটক করা হচ্ছে বলে স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে অভিযোগ রয়েছে। তবে চলতি বছরের সেপ্টেম্বরে বাংলাদেশ ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন সংশোধন করে সাইবার নিরাপত্তা আইন প্রণয়ন করেছে। পাশাপাশি রোহিঙ্গা শিবিরে সহিংসতাকে উদ্বেগের কারণ হিসাবে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।

এতে বলা হয়েছে, আটককৃতদের মাধ্যমে কারাগারে উগ্রবাদের প্রচার ঘ্টছে যা উদ্বেগের কারণ হতে পারে। অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা ও সন্ত্রাস মোকাবিলায় বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সহযোগিতা করেছে। বাংলাদেশ ইন্টারপোলের সঙ্গে তথ্য বিনিময় করে। তবে বাংলাদেশের নিজস্ব কোনো সন্ত্রাসী নজরদারি তালিকা নেই। পুলিশের বিশেষ শাখার (এসবি) নেতৃত্বে একটি ‘অ্যালার্ট তালিকা’ প্রকল্প সরকারের বিবেচনায় আছে। সেই সঙ্গে বাংলাদেশ বর্তমানে আকাশপথের যাত্রীদের আগাম তথ্য নিয়মিতভাবে যাচাই করে না বলেও এতে উল্লেখ করা হয়েছে।