কী থাকে ৬০০ টাকার গরুর মাংসে!

ছবি: সংগৃহীত

জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের নির্দেশ ও অভিযানের মুখে রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে ৬০০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে গরুর মাংস। যদিও সব বাজারের চিত্র এমন নয়। ব্যবসায়ীরা বলছেন, অভিযানের মুখে তারা দাম কমাতে বাধ্য হচ্ছেন। আর ক্ষতি পুষিয়ে নিতে কৌশল অবলম্বন করছেন।

রোববার একটি জাতীয় দৈনিকের অনলাইন প্রতিবেদনে গরুর মাংস বিক্রেতারা জানান,‌ ‘আগে খুলির সাইডের মাংস-হাড্ডি এগুলো ফেলে দেওয়া হতো। এখন আর কোনো ফেলানি নাই। গরুর কোনো কিছুই এখন ফেলে না। আগে পায়ের হাঁটুর অংশ, মাথার অংশ, রগ, বট, নলি-পায়া আলাদা বেচত এখন মিশিয়ে দেয়। ছাটাছুটা মিশিয়ে ৬০০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে।’

তারা বলছেন, আগে মাংসে ১০০ গ্রাম চর্বি, ১০০ গ্রাম হাড্ডি থাকত। এখন ৩০০ গ্রাম হাড্ডি, ২০০ গ্রাম চর্বি আর ৫০০ গ্রাম মাংস মিলিয়ে ৬০০ টাকা কেজি বিক্রি করি।

রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, হাড় ও চর্বি গ্রহণযোগ্য পরিমাণে থাকে এমন গরুর মাংসের কেজি ৭ শ থেকে সাড়ে ৭ শ টাকায় পাওয়া যায়। একসঙ্গে কয়েক কেজি নিলে দাম আরো কিছুটা কমে। তবে ৬০০ টাকায় ভালো পরিমাণে গরুর মাংস পাওয়া যায় না। তাতে হাড় ও চর্বির পরিমাণ বেশি থাকে। বরাবরই মাংস ব্যবসায়ীরা এ কৌশল বেছে নেন।

তবে রোববার রাজধানীতে মাংস ব্যবসায়ীদের সঙ্গে এক মত বিনিময় সভায় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এ এইচ এম সফিকুজ্জামান বলেন, বর্তমানে রাজধানীর বেশিরভাগ বাজারে ৬০০ টাকা কেজিদরে বিক্রি হলেও, তা একশো টাকা কমানো সম্ভব। যৌক্তিক দর নির্ধারণে ডেইরি ফার্মারর্স অ্যাসোসিয়েশন ও মাংস ব্যবসায়ী সমিতিকে তাগিদও দেন তিনি।

খাদ্যপণ্যের লাগামহীন উর্ধ্বগতিতে, গরুর মাংসের দামও এক পর্যায়ে চলে যায় সাধারণের নাগালের বাইরে। কেজিপ্রতি দাম ছাড়িয়ে যায় ৮০০ টাকার ওপরে। এক পর্যায়ে কমতে থাকে গরুর মাংসের চাহিদা। ফলে গত নভেম্বরের শেষের দিকে কমে আসতে শুরু করে দাম। এখন বাজার ভেদে গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৬০০ থেকে ৭০০ টাকা কেজি দরে।

গত মার্চে গরুর মাংসের দাম ৮০০ টাকায় উঠেছিল। বিক্রেতারা বলছেন, কম দামে গরু পাওয়ার কারণে তারা এখন আগের চেয়ে কম দামে মাংস বিক্রি করতে পারছেন।

খামারিরা বলছেন, গোখাদ্যের দাম বেশি হওয়ার পাশাপাশি খামারিরা নানা কারণে চাপে আছেন। তাতে একটু কম দামে গরু বিক্রি করে অনেকে চালান টেকানোর চেষ্টা করছেন। এর কারণে দাম একটু কমেছে। তবে দীর্ঘ মেয়াদে খামারিরা এটা করতে চাইবেন না।

মাংস ব্যবসায়ী সমিতি মনে করে, বাজারে মাংসের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে হলে গরুর উৎপাদন খরচে লাগাম টানতে হবে, অথবা বিদেশ থেকে গরু আমদানি করতে হবে। কিন্তু খামারিদের সুরক্ষা দেওয়ার বিবেচনায় গরু বা গরুর মাংস আমদানি করার সিদ্ধান্ত নেই। তবে স্থানীয়ভাবে গরুর দাম আবার বেড়ে গেলে ভারত থেকে চোরাই পথে গরু আনার চেষ্টা করবে এক শ্রেণি। এ নিয়ে সতর্ক থাকতে হবে।