ড্রাগন ফলে নিষিদ্ধ ভারতীয় টনিক: মৃত্যুঝুঁকি বাড়ছে বাংলাদেশিদের

ড্রাগন ফলে নিষিদ্ধ ভারতীয় টনিক: মৃত্যুঝুঁকি বাড়ছে বাংলাদেশিদের

ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার চাষিদের কাছে লাভজনক ফল ড্রাগন। এ উপজেলাতে এক যুগ আগে শুরু হওয়া ড্রাগন ফল চাষ শুরু হয়। এই ফল চাষ লাভজনক হওয়ায় এর চাষ বেড়েছে অনেক। চোখকাড়া রং, অসাধারণ স্বাদ ও ঔষধি গুণের কারণে সবার কাছে ড্রাগন ফল বেশ প্রিয়। ড্রাগন ফল চাষে এখন ব্যবহার করা হচ্ছে নানা ধরনের ঔষধি রাসায়নিক ও হরমোন। এতে স্থাস্থ্যঝুঁকির আশঙ্কা করা হচ্ছে।

জানা গেছে, বাজারে চাহিদা বেশি থাকার কারণে ড্রাগন ফল চাষিরা প্রাকৃতিক পদ্ধতির চাষাবাদ ছেড়ে না ধরনের রাসায়নিক টনিকসহ বিভিন্ন রকম হরমোন প্রয়োগে মনোযোগ দিচ্ছে। এ ফলের আকার বড় করতে অধিকাংশ ড্রাগন ফল চাষিরা ‘ইন্ডিয়ান ডক্টর ডানস ড্রাগন’ টনিক ব্যবহার করছেন। বর্তমানে অনেকে টনিকের পরিবর্তে প্লানোফিক্স ও পাওয়ার ট্যাবলেট পানির সঙ্গে মিশিয়ে অপুষ্ট ড্রাগন ফলে স্প্রে করছেন।

এতে ড্রাগন ফলের আসল লাল রং হারিয়ে লাল সবুজ ফলে পরিণত হচ্ছে। রাসায়নিক এসব স্প্রে ফলের জন্য ক্ষতিকর কিনা তা নিয়ে জনমনে শঙ্কা দেখা দিয়েছে। ড্রাগন ফল যখন সাধারণ মানুষের কাছে খুব গ্রহণযোগ্যতা পেয়েছে। অসাধু কিছু চাষি অধিক লাভের আশায় ধরন্ত ড্রাগন ফলে হরমোন স্প্রে করছে।

কালীগঞ্জে ড্রাগন চাষাবাদের প্রথম দিকে হরমোন ব্যবহার সীমিত থাকলেও এখন তা বেড়েছে অনেক গুণ হারে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন চাষি জানান, টনিক ও হরমোন মিশিয়ে ড্রাগন গাছে ফুল আসলে স্প্রে করা হয়, এতে ফলের ওজন অল্প দিনে ৪০০ গ্রাম থেকে ১ কেজি হচ্ছে। এ কারণে ফলের খোসা মোটা ও পুরু হয়ে যায়। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কিছু চাষি এ ফলে জিব্রালিক ট্যাবলেট, সলুবর বরন ও মিরাকুলান নামের রাসায়নিক ওষুধ ব্যবহার করছেন।

কালীগঞ্জ উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, এ উপজেলাতে ২১৬ হেক্টর জমিতে ড্রাগন ফল চাষ হচ্ছে। আর হেক্টরপ্রতি ২৬ টন ফল উৎপাদন করছে চাষিরা। অনেক কৃষক ২ বিঘা থেকে ২৫ পর্যন্ত এ ফল চাষ করছেন বলে জানা যায়।

কালীগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মাহবুব আলম রনি বলেন, ড্রাগন ফল চাষে গোপনে টনিক ব্যবহার করা হচ্ছে। মাঠ পর্যায়ে আমরা চাষিদের জৈবসার ব্যবহার করে উৎপাদন বাড়ানোর পরামর্শ দিচ্ছি। মাত্রা অতিরিক্ত টনিক ব্যবহার শুধু ড্রাগন কেন যেকোনো ফলের জন্যই ক্ষতিকর।

ঝিনাইদহ জেলা ড্রাগন চাষি কল্যাণ সমিতিরি সভাপতি এস এম টিপু সুলতান বলেন, ড্রাগন চাষে ক্ষতিকর টনিক বা অনুমোদনহীন হরমোন ব্যবহার বন্ধের ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট দপ্তর ও কর্মকর্তাদের সঙ্গে একাধিকবার কথা বলেছি। বর্তমানে আমাদের জেলায় উৎপাদিত এ ফল অন্য দেশে রপ্তানি হচ্ছে। তাই ক্ষতিকর এসব রাসায়নিক ব্যবহার ড্রাগন ফলের চাহিদার ওপর ব্যাপক প্রভাব ফেলতে পারে।

ঝিনাইদহ জেলা নিরাপদ খাদ্য কর্মকর্তা সাধন রায় জানিয়েছেন, আমরা এরই মধ্যে ড্রাগন ফলের বাজার মনিটরিং শুরু করেছি। যেহেতু টনিক বা হরমোন স্প্রের মাধ্যমে ড্রাগন ফলের ওজন বাড়ানো হচ্ছে তাই ঝুঁকিপূর্ণ খাদ্য তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করে পরীক্ষার জন্য ঢাকা হেড অফিসে পাঠাব। ফল এলেই জানা যাবে হরমোন বা টনিক মানব দেহের জন্য কতটা ঝুঁকিপূর্ণ ।