একি খেলা চলছে হরদম

নির্বাচনী খেলা জমাতে কতই না কায়দা করছে আওয়ামী লীগ। প্রতিদিন সংবাদ সম্মেলন করছেন দলটির সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। শেখ হাসিনা নিজেও ঘুরে এসেছেন তার নির্বাচনের সবশেষ আশ্রয়স্থল টুঙ্গিপাড়া-কোটালিপাড়া।   জনগণকে ধোকা দিতে সেখানে তিনি করলেন প্রটোকল না নেয়ার নাটক। মানে সরকার একেবারেই নির্বাচনকালীন সরকার। এতটাই নির্বাচনকালীন সরকার যে প্রধানমন্ত্রী নিজেও পতাকাবিহীন গাড়িতে চড়েছেন! মানুষকে কতটা বোকা ভাবে এরা! কিন্তু মানুষ কি আসলেই অতো বোকা?

নির্বাচন কমিশনাররা আজ এ জেলায় তো কাল ও জেলায় ঘুরছেন আর তোতা পাখির মত বুলি আওড়াচ্ছেন ভোটাররা এবার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারবেন।  নির্বাচন কমিশন নিজেকে শক্তিশালী প্রমাণে এ থানার ওসিকে ও থানায়, এ জেলার এসপিকে ও জেলায়, এ জেলার ডিসিকে ও জেলায় পাঠাচ্ছে। মনোনয়নপত্র বাছাইকালে কিছু ‘প্রভাবশালী’ ব্যক্তির মনোনয়ন বাতিল করা হয়েছিল, সেগুলোর আবার সিংহভাগ  ফিরে পেয়েছেন। এসবই করা হচ্ছে নির্বাচন কমিশনকে শক্তিশালী প্রমাণ করার জন্য। আওয়ামী লীগের কিছু প্রভাবশালী নেতাকেও আচরণবিধি ভঙ্গের জন্য ‘শোকজ’ করেছে কমিশন।  কমিশনের আশা মানুষ বলবে, ওরে বাবা, এরা এসব কি করছে! কতই না শক্তিশালী এরা!

কিন্তু তা আর শোনা যাচ্ছে কোথায়? কান পাতলে বরং উল্টোটাই শোনা যায়, সাজানো আর পাতানো নির্বাচনের কথাই শোনা যায়।  নির্বাচন কমিশন যতই আবহ সৃষ্টি করার চেষ্টা করুক মানুষকে ভোটের প্রতি আগ্রহী করে ‍তুলতে পারছে না।  উচ্ছিষ্টভোগী কিছু মানুষ প্রতিদিনই টেলিভিশনের টকশোতে হাজির হয়ে নির্বাচন নিয়ে কথা বলছেন, তাদের সবার বক্তব্যের একই সুর ‘এবারের নির্বাচনটা নাকি একটু আলাদা ধরণের হতে যাচ্ছে!’ খুবই নাকি হাড্ডাহাড্ডি ধরণের লড়াই হবে নির্বাচন।  আওয়ামী লীগের প্রার্থী নৌকা মার্কায় নির্বাচন করবেন, আওয়ামী লীগেরই কিছু লোক দল থেকে অনুমতি আর আশির্বাদ নিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন নির্বাচন নামের খেলাটাকে জমিয়ে তোলার জন্য।

মনে হচ্ছে নির্বাচনটাকে একটা খেলাই বানিয়ে ফেললো আওয়ামী লীগ। ২০১৪ সালের ভোটারবিহীন নির্বাচনের পর ২০১৮ সালের রাতের ভোট বা মহাপ্রতারণার নির্বাচন।  এবার করতে যাচ্ছে সাজানো  ও আসন ভাগাভাগির নির্বাচন। সব দেখে শুনে শেখ সাদী খানের লেখা আর রফিকুল আলমের গাওয়া গানের মত করেই বলা যায়, ‘একি খেলা চলছে হরদম’।